মনা যশোর প্রতিনিধিঃ
ঘটনা ও গ্রেফতারের বিবরণঃ
মামলার বাদী গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুরের টুলু মিয়া
এজাহার দায়ের করেন তিনি আরএসবি ইট ভাটার ম্যানেজার পদে কর্মরত আছেন। তার প্রতিষ্ঠানের ইট ভাটার জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য কয়লার প্রয়োজন হয়। আর সে জন্য অভয়নগর থানাধীন বিভিন্ন কয়লার প্রতিষ্ঠান থেকে কয়লা ক্রয় করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় অজ্ঞাতনামা কয়েক জন ব্যক্তি মোবাইল ফোনে প্রতিষ্ঠানের মালিক ও তার সাথে কয়লা দেবার কথা বলে কয়েক দিন ধরে যোগাযোগ করতে থাকে। একপর্যায়ে সে এবং তার মালিক সাজু প্রধান ইং ১৯/০৩/২০২৫খ্রিঃ বেলা অনুমান ১২.০০ ঘটিকায় অভয়নগর থানাধীন পাঁচকবর গোল্ডেন-২ স্কেলে আসে এবং আসামিরা তাদের কয়লা দেখায়। পরবর্তীতে সে এবং সাজু প্রধান তাদের সাথে কয়লা ক্রয় করতে সম্মতি জানায়। তখন আসামিরা তাদের সামনে পাঁচটি ট্রাকে ক্রয়কৃত মোট ১১৯টন কয়লা( যার মূল্য ২০,১১,১০০/- টাকা) লোড করে এবং তাদের নিকট টাকা চাইলে বাদী পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ প্রদান করে আর বাকি টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধের কথা বলে। পরবর্তীতে বাদী আসামিদের দেওয়া আরো দুটি ব্যাংক একাউন্টে মোট পনের লক্ষ এগারো হাজার একশত টাকা(১৫,১১,১০০/-) প্রেরণ করে। এর কয়েক দিন পর উক্ত প্রতিষ্ঠান কয়লার ট্রাক না পৌঁছালে বাদী আসামিদের দেওয়া মোবাইলে যোগাযোগ করলে তাদের ব্যবহৃত সকল নাম্বার বন্ধ দেখায় তখন বাদী বুঝতে পারে তারা কোন প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছে।
বাদীর এমন এজাহারের প্রেক্ষিতে জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার মহোদয় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করেন এবং রহস্য উদঘাটনে জেলা গোয়েন্দা শাখা(ডিবি),যশোরকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
সম্মানিত পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় অফিসার ইনচার্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা(ডিবি), যশোরের নেতৃত্বে এসআই(নিঃ)/ রাজেশ কুমার দাশ, এসআই(নিঃ)/ মোঃ কামাল হোসেন, এসআই(নিঃ)/মোঃ কামরুজ্জামান, এএসআই(নিঃ)/ নির্মল কুমার ঘোষ সঙ্গীয় ফোর্স-সহ অভিযান পরিচালনা করে ইং-১৮/০৪/২০২৫খ্রিঃ রাত ২৩.০৫ ঘটিকার ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানা এলাকা হতে আসামি কামাল খান(৫৬) ও মোঃ নাসির হাওলাদার(৬৯)দ্বয়কে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে তারা এবং তাদের সহযোগী অন্যান্য আসামিদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করে।
আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাদের নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ০৮টি ব্ল্যাঙ্ক চেকের পাতা, ০৪টি ডিজিটাল রাবার সীল, ০১টি মোবাইল ফোন ও নগদ আত্মসাৎকৃত এক লক্ষ টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে আসামিদের তথ্য মতে অদ্য ১৯/০৪/২০২৫ খ্রিঃ ভোর ০৪.২৫ ঘটিকায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানাধীন রস্তমপুর এলাকায় নিজ নিজ বসত বাড়ি হতে আসামি মোঃ মনিরুল ইসলাম(৩৫) ও মোঃ আক্তারুজ্জামান(৩৪)’ কে গ্ৰেফতার করে ডিবি পুলিশ।
ধৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে এবং আসামি মনিরুল ইসলামের নিকট মামলার প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ০১টি মোবাইল ফোন ও আত্মসাৎকৃত ১,০০,০০০/- টাকা এবং আসামি মোঃ আক্তারুজ্জামান এর নিকট হতে আত্মসাৎকৃত ২০,০০০/-টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং এদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত আসামি কামাল হোসেন এর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে বিভিন্ন থানায় ০৩টি প্রতারণা মামলা এবং আসামি নাসির হাওলাদারের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে বিভিন্ন থানায় ০৬টি প্রতারণা মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ও ঠিকানাঃ
১। মোঃ কামাল খান(৫৬), পিতা-মৃত আব্দুল মালেক খান, মাতা-মৃত ময়না বেগম, সাং-কৃষ্ণবাটি, ৩নং ওয়ার্ড, থানা-ঝালকাঠি সদর, জেলা-ঝালকাঠি,
২। মোঃ নাসির হাওলাদার ওরফে আঃ রহমান হাওলাদার(৬৯), পিং-মৃত লেহাজুউদ্দিন হাওলাদার, মাতা-মৃত ডালিম বেগম, সাং-উত্তর শিয়ালকাঠি, থানা-ভান্ডারিয়া, জেলা-পিরোজপুর, এ/পি সাং-লেম্বুনিয়া (হেমায়েত মেম্বর এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-রাজাপুর, জেলা-ঝালকাঠি,
৩। মোঃ মনিরুল ইসলাম(৩৫), পিং-মোঃ আফসার উদ্দিন, মাতা-মাজিদা বেগম, সাং-রস্তমপুর (পশ্চিমপাড়া), থানা-ডুমুরিয়া, জেলা-খুলনা’
৪। মোঃ আক্তারুজ্জামান(৩৪), পিং-মোঃ জালাল উদ্দিন খা, মাতা-মমতাজ বেগম, সাং-রস্তমপুর (পশ্চিমপাড়া), থানা-ডুমুরিয়া, জেলা-খুলনা’
উদ্ধার –
১। আত্মসাৎকৃত টাকার মধ্যে হইতে নগদ ২,২০,০০০/- টাকা,
২। প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের ০৮ টি ব্লাঙ্ক চেক,
৩। ০৪টি ডিজিটাল রাবার সীল,
৪। প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ০২টি মোবাইল ফোন।